সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

Featured Post

পোস্টমাস্টার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। (গল্পগুচ্ছ)

পোস্টমাস্টার  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। (গল্পগুচ্ছ)  প্রথম কাজ আরম্ভ করিয়াই উলাপুর গ্রামে পোস্টমাস্টারকে আসিতে হয়। গ্রামটি অতি সামান্য। নিকটে একটি নীলকুঠি আছে, তাই কুঠির সাহেব অনেক জোগাড় করিয়া এই নূতন পোস্টআপিস স্থাপন করাইয়াছে।

হাজার চুরাশির মা। মহাশ্বেতা দেবী। রিভিউ।

রিভিউ লেখকঃ অরণ্য আরিফ।
বন্দুকের নল ক্ষমতার উৎস! নির্বাচন বুর্জোয়াদের ধোঁকাবাজি!! পার্লামেন্ট শুয়োড়ের খোয়ার!!! ষাটের দশকের কলকাতায় চারু মজুমদারের ইশতেহারের ডাকে নকশালবাড়ি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল অসংখ্য শিক্ষিত তরুণ। ভারত বর্ষের বিপ্লবের অচলায়তন ভেঙ্গে একটা ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ বসন্তের বজ্র নির্ঘোষ ঘোষণা করেছিলেন চারু মজুমদার। ভারতের সংশোধনবাদী ঘেরাটোপে ঘুরপাক খাওয়া আন্দোলনকে ঝটকা টানে বিপ্লবের চৌরাস্তায় এনে দাঁড় করিয়েছিলেন। সেই মুক্তির ডাকে ব্রতীর মত অসংখ্য তরুন যোগ দিয়েছিলেন একটি শ্রেনীহীন শোষনমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষে।

অন্যান্য অনেক তরুণের মত কলেজপড়ুয়া ব্রতিও গিয়েছিল সে আন্দোলনে। কিন্তু বাড়িতে খবর এলো, সে ফিরেছে লাশ হয়ে। লেখাপড়ায় ভাল, আদরের সন্তান ব্রতী নয় বরং হাজার চুরাশি নাম্বার লাশের দায়িত্ব বুঝে নিতে বলা হয় তার মা, সুজাতাকে। নকশালবাড়ি আন্দোলনে ছেলে হারানো এক মায়ের মর্মস্পর্শী এই গল্প লিখেছিলেন মহাশ্বেতা দেবী, তার ‘হাজার চুরাশির মা’ উপন্যাসে।
ব্রতী শ্রেণিশত্রু, রাষ্ট্রের সহকারী ও পার্টির অভ্যন্তরে প্রতি-বিপ্লবীদের ক্রমাগত নির্মমভাবে হত্যা করার পক্ষপাতী ছিল। গল্পটি শুরু হয়েছে ব্রতীর মৃত্যুবার্ষিকীর দিন। সুজাতা ব্রতীর জন্ম থেকে তাঁর ছেলের স্মৃতিচারণা করছেন। তাঁর সঙ্গে ব্রতীর এক ঘনিষ্ঠ সহকর্মীর দেখা হয় এবং তিনি ব্রতীর বিপ্লবী মানসিকতার বিচার করতে চেষ্টা করেন। সমগ্র উপন্যাসে তাঁকে একজন কঠোর মানসিকতার নারী হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। তিনি সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গিয়েছেন। তাঁকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তিনি যেন তাঁর ছেলেকে ভুলে যান। কারণ, তাঁর ছেলের মতো লোকেরা “ক্যানসারাস গ্রোথ অন দ্য বডি অফ ডেমোক্রেসি”। উপন্যাসটিতে মধ্যবিত্তর তথাকথিত সামাজিকতার আড়ালে ভন্ডামিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে নিপুনভাবে।
ধারনা করা হয়, হাজার চুরাশির মা’ বইয়ে ব্রতীর চরিত্রটা লেখিকার ছেলে আরেক বিখ্যাত কবি নবারুণের ভট্টাচার্য চিত্র যার ডাক নাম ছিল- বাপ্পা। মহাশ্বেতা দেবী আদর করে ‘বাবু’ বলে ডাকতেন। ছেলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে একটা সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন- "বাপ্পা বই পাগল ছিল। বই পড়তে ভীষণ ভালোবাসতেন। ওর মতো ছেলের নিজস্ব একটা জগত থাকবেই। সেই জগতেই ও থাকত। ও একেবারেই বইয়ের জঙ্গলের মধ্যে শিকারী হয়ে ঘুরে বেড়াতো। বাপ্পা শুরুই করেছিল কবিতা দিয়ে। ওর একটা কবিতা খুব মনে পড়ে, ‘একটা কথার ফুলকি উড়ে শুকনো ঘাসে পড়বে কবে/ সারা শহর উত্থাল-পাথাল, ভীষণ রাগে যুদ্ধ হবে/ফাটবে চিবুক, পোড় খাবে বুক, একটা নদী উতল হয়ে’।"
"হাজার চুরাশির মা" বইটার নাম অনেক শুনেছি কিন্তু পড়া ছিল না, মধ্যরাতে যখন শেষহল খানিকক্ষন ঝিম মেরে বসে ছিলাম, এক বসাতে অনেকদিন পর কোনবই শেষ করেছি। হয়তো অনেকদিন ফিকশন পড়া হয় না এ কারনেই হবে। বারান্দায় দাড়িয়ে শেষ ধুম্রশলাকায় আগুন দিয়ে ঘোর কাটানোর চেষ্টা করলাম আর ভাবলাম আমরা শুধু শ্লোগান দিয়ে আর লিখে যাই, কিছু মানুষ এগুলোকে বিশ্বাস করে একটি সুন্দর পৃথিবীর জন্য হাসিমুখে জীবন উৎসর্গ করে গেছে নিঃশর্তহীনভাবে!!!
ডাউনলোড করে পড়তে চাইলে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ